September 19, 2024, 10:14 pm
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশকে মারপিট করে আসামী ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় অন্তত ৮-১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এঘটনায় উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুজ্জামান সহ ৮জন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামানের বাংলোবাড়ি এবং মাঝিড়াস্থ তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে থানা চত্বরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে থানায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার আড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযানে চালিয়ে আড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন মিয়াকে ২টি বার্মিজ চাকু সহ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। মিঠুন মিয়ার নামে হত্যা মামলা সহ বেশ কয়েকটি মামলার চলমান রয়েছে। মিঠুন মিয়াকে থানায় নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান অর্ধশতাধিক মটরসাইকেলের বহর নিয়ে থানায় প্রবেশ করে আসামী মিঠুন মিয়াকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় থানার ওসি শহিদুল ইসলামকে ধাক্কা দেয় এবং অপর পুলিশ সদস্যদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারপিট করে পালিয়ে যায়। মারপিটে অন্তত ১০জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে এসআই আনিছুর রহমান, কন্সটেবল ইসমাইল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, রুহুল আমিন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এর কিছু পরে নুরুজ্জামান তার বাহিনীর আরো সদস্যকে সংঘবদ্ধ করে আবারো থানায় আক্রমণ করতে মাঝিড়াস্থ তার পুরাতন বাড়ির সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে একত্রিত হয়েছে এমন খবর পেয়ে অতিরিক্ত আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনির সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামান সহ ৮ জনকে আটক করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, জমি দখল, সরকারি কাজে বাঁধাসহ ৮-১০টি মামলা রয়েছে। এক বছর আগে হাট-বাজার ইজারা টেন্ডারের সময় উপজেলা অডিটোরিয়ামে সবার সামনে থেকে কৌশলে দরপত্র চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নুরুজ্জামান চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামান সন্ত্রাসীদের গড ফাদার। তার বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এই বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে মাদক, ইট বালু মাটি সিন্ডিকেট, জমি দখলসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ভয়ে নিজ দলীয় নেতাকর্মীসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ আতংকে রয়েছেন। এমন কি গণমাধ্যমকর্মীরা পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মটরসাইকেলের বহর নিয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলে থানায় প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামি ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় থানায় হামলা মারপিট, আগ্নেয়াস্ত্রসহ একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সন্ত্রাসী নিধনে অভিযান চলমান থাকবে।